আল্লাহু আকবার (Allahu Akbar) পড়ার ফযীলত

আল্লাহু আকবার (Allahu Akbar) পড়ার ফযীলত

আল্লাহু আকবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী স্লোগান এবং জিকির। এর অর্থ "আল্লাহ মহান"। এটি মুসলিমদের মধ্যে আল্লাহর বড়ত্ব ও মহিমা প্রকাশ করার একটি মাধ্যম। এই বাক্যটি বিভিন্ন ইবাদত, যেমন- নামাজ, আজান, হজ, এবং অন্যান্য সময়ে ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভক্তি প্রকাশ করা হয়।

"আল্লাহু আকবার" (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ) একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক শব্দ যা মুসলিমরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করে। এর অর্থ হল আল্লাহ সবচেয়ে মহান। এই শব্দটি নামাজের মধ্যে, আযানে, পশু জবাই করার সময়, বিভিন্ন দোয়া ও জিকিরে এবং আনন্দ বা দুঃখের মুহূর্তেও উচ্চারিত হয়। এটি আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ত্বের স্বীকৃতি এবং বান্দার প্রতি তাঁর প্রতি আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ।


আল্লাহু আকবার পড়ার ফযীলত

اللّٰهُ أَكْبَر (আল্লাহু আকবার) পড়ার ফজিলত

অর্থ: “আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ” বা “আল্লাহ সবচেয়ে বড়”


আল্লাহু আকবার এর তাৎপর্য:

“আল্লাহু আকবার” শব্দটি মুমিনের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। এটি দ্বারা বোঝানো হয়—

কোনো কিছুই আল্লাহর চেয়ে বড় নয়।


আল্লাহু আকবার পড়ার ফজিলতসমূহ:

১. শয়তান পালিয়ে যায়

হাদীস:

“যে ব্যক্তি আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ বলে, শয়তান তার থেকে দূরে থাকে।”

— (মুসলিম)


২. নামাজ শুরু হয় এই শব্দ দিয়ে

নামাজের প্রথম তাকবীর হলো “আল্লাহু আকবার” — যা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে।


৩. জিহাদ বা সাহসিকতা প্রকাশে প্রেরণা

নবীজি ﷺ যুদ্ধের সময় সাহাবাদের "আল্লাহু আকবার" বলতে বলতেন, যাতে তাদের ঈমান ও সাহস দৃঢ় হয়।


৪. তাকদীর ও দোয়ার সময় বলা সুন্নাত

কষ্টের সময়, বিজয়ের মুহূর্তে বা খুশির সময় "আল্লাহু আকবার" বলা প্রিয় আমল।


৫. হজ ও ঈদের প্রধান স্লোগান

হজের সময়, ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের সময় মুসুল্লিরা "আল্লাহু আকবার" বলে তাকবীর পাঠ করেন।


আল্লাহু আকবার বলার গুরুত্ব ও ফজিলত

"আল্লাহু আকবার" বলার ফযীলত (গুরুত্ব ও ফজিলত) অনেক। 

নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:

আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা:

এই শব্দটি উচ্চারণের মাধ্যমে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব ঘোষণা করা হয়। 

ঈমানের বহিঃপ্রকাশ:

"আল্লাহু আকবার" বলা বান্দার ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

জিকির ও তাসবিহ:

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জিকির এবং তাসবিহ যা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম মাধ্যম। 

নামাজ ও আযানে ব্যবহার:

নামাজ শুরু করার সময়, আযানে এবং ইক্বামতে "আল্লাহু আকবার" বলা হয়, যা নামাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। 

আল্লাহর সন্তুষ্টি:

"আল্লাহু আকবার" বলা আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয় এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। 

ঈমানের দৃঢ়তা:

এই বাক্যটি পাঠের মাধ্যমে বান্দার ঈমান দৃঢ় হয় এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস আরও মজবুত হয়। 

গুনাহ মাফ:

হাদিসে বর্ণিত আছে যে, "সুবহানাল্লাহ", "আলহামদুলিল্লাহ", এবং "আল্লাহু আকবার" পাঠ করলে আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন। 

দুঃখ-কষ্ট লাঘব:

"আল্লাহু আকবার" পাঠ করলে দুঃখ-কষ্ট লাঘব হয় এবং মনে প্রশান্তি আসে। 

শত্রুর মোকাবিলা:

এই বাক্যটি পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য ও সমর্থন লাভ করা যায় এবং শত্রুর মোকাবিলা করা সহজ হয়। 

নেকির পাল্লা ভারী হওয়া:

"আল্লাহু আকবার" পাঠের মাধ্যমে নেকির পাল্লা ভারী হয় এবং আখিরাতে মুক্তির পথ সুগম হয়। 

সালাতের গুরুত্ব:

নামাজের প্রতিটি কাজে "আল্লাহু আকবার" বলা হয়, যা সালাতের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। 

আজান ও ইকামতে তাৎপর্য:

আজান ও ইকামতে "আল্লাহু আকবার" বলা হয়, যা মানুষকে নামাজের জন্য আহ্বান করে। 

জিহাদের অনুপ্রেরণা:

যুদ্ধের ময়দানে "আল্লাহু আকবার" বলা মুসলিম যোদ্ধাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। 

অন্যান্য পরিস্থিতিতেও ব্যবহার:

বিপদ ও আনন্দের মুহূর্তেও এটি উচ্চারণ করা হয়। 

যুদ্ধের সময় সাহস ও শক্তি:

যুদ্ধের ময়দানে এটি যোদ্ধাদের সাহস ও শক্তি যোগায়। 

গুনাহ মাফের মাধ্যম:

এই তাসবিহ পাঠের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। 

সওয়াবের আধার:

আল্লাহু আকবার পাঠ করা অফুরন্ত সওয়াবের কাজ। 

কোরআন ও হাদিসে এর গুরুত্ব:

কোরআন ও হাদিসে এই শব্দটির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। 

মোটকথা, "আল্লাহু আকবার" বলা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা মুসলিম জীবনে বিভিন্নভাবে তাৎপর্য বহন করে। 

সাধারণ জিকির:

সাধারণ সময়েও "আল্লাহু আকবার" জিকির করা উত্তম এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর স্মরণ ও নৈকট্য লাভ করা যায়। 

মোটকথা, "আল্লাহু আকবার" একটি বরকতময় বাক্য, যা মুসলিমদের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, ক্ষমা, এবং সর্বোত্তম প্রতিদানের মাধ্যম।