আস্তাগফিরুল্লাহ (Astaghfirullah) বলার ফজিলত ও উপকারিতা

আস্তাগফিরুল্লাহ (Astaghfirullah) বলার ফজিলত ও উপকারিতা

আস্তাগফিরুল্লাহ (Astaghfirullah) একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক দোয়া, যার অর্থ "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি"। এর ফজিলত বা গুরুত্ব অপরিসীম। এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে নিজেদের কৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চায় এবং আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের আশা করে। নিয়মিত আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করলে অনেক উপকারিতা লাভ করা যায়, যেমন- গুনাহ মাফ, বিপদ থেকে মুক্তি, রিজিক বৃদ্ধি এবং আত্মিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। 

আস্তাগফিরুল্লাহ এর ফজিলত

“আস্তাগফিরুল্লাহ” (أستغفرُ الله) শব্দটির অর্থ হলো:

“আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসতেগফার (ক্ষমা প্রার্থনার) বাক্য, যা মুসলমানরা আল্লাহর কাছে তাদের গুনাহ ও ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে পড়ে থাকেন।


“আস্তাগফিরুল্লাহ” বলার ফজিলত ও উপকারিতা:

১. গুনাহ মাফ হয়

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

“যে ব্যক্তি আস্তাগফিরুল্লাহ বলবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন—যদি সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারীও হয়।”

(আবু দাউদ, হাদীস ১৫১৭)


২. রিজিক ও বরকতের দরজা খুলে যায়

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন:

“তোমরা তোমাদের প্রভুর নিকট ক্ষমা চাও, তিনি তোমাদের উপর আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, এবং সম্পদ ও সন্তান দ্বারা তোমাদের সাহায্য করবেন।”

(সূরা নূহ, আয়াত ১০–১২)


৩. কষ্ট, দুশ্চিন্তা ও বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

রাসূল (সা.) বলেন:

“যে ব্যক্তি নিয়মিত ইসতেগফার করে, আল্লাহ তার জন্য প্রতিটি চিন্তার মধ্যে থেকে মুক্তির পথ, প্রতিটি দুঃখের থেকে মুক্তি, এবং এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করে না।”

(আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)


৪. আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন হয়

কুরআনে বলা হয়েছে:

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্রতা অর্জন করে তাদের ভালোবাসেন।”

(সূরা বাকারা, আয়াত ২২২)


৫. জান্নাতের পথ সহজ হয়

নিয়মিত ইসতেগফার জান্নাতের পথে সহায়ক ও গুনাহের বোঝা হালকা করে।


কখন বেশি “আস্তাগফিরুল্লাহ” পড়া উত্তম?

নামাজের পর

রাতে ঘুমানোর আগে

কষ্টের সময়

ভোরবেলা (সেহরি সময়)

কোনো ভুল বা গুনাহ হয়ে গেলে


উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি ইসতেগফারের দোয়া:

১. أستغفرُ اللهَ العظيمَ وأتوبُ إليه

“আমি মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই এবং তাঁর নিকট তাওবা করি।”


২. ربِّ اغفر لي وتُب عليّ، إنك أنت التوّابُ الرحيم

“হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার তাওবা কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি তাওবা গ্রহণকারী ও পরম দয়ালু।”



উপসংহার:

“আস্তাগফিরুল্লাহ” হলো একটি ছোট কিন্তু অত্যন্ত মূল্যবান যিকর। এর মাধ্যমে মানুষ আত্মশুদ্ধি লাভ করে, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে এবং পার্থিব ও পরকালীন কল্যাণ লাভ করে। আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করা গুনাহ মাফের একটি অন্যতম মাধ্যম। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, "যে ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামি হয়",। 

আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করলে বিপদাপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিয়মিত আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করলে আল্লাহ বান্দার রিজিক বৃদ্ধি করে দেন। আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠে বান্দার মনে প্রশান্তি আসে এবং ইবাদতে মনোযোগ বাড়ে। এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। সুতরাং, আস্তাগফিরুল্লাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া, যা নিয়মিত পাঠ করা উচিত এবং এর ফজিলত বা উপকারিতা অপরিসীম। 

প্রতিদিন ১০০ বার বলার চেষ্টা করুন, ইনশাআল্লাহ আপনি শান্তি ও বরকত অনুভব করবেন।