আলহামদুলিল্লাহ (Alhamdulillah) পড়ার ফযীলত

আলহামদুলিল্লাহ পড়ার ফযীলত

আলহামদুলিল্লাহ (Alhamdulillah) শব্দের অর্থ "সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য"। এটি একটি আরবি শব্দ যা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে এবং তাঁর প্রশংসা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আলহামদুলিল্লাহ বলার অনেক ফজিলত বা গুরুত্ব রয়েছে। এটি নিয়মিত পাঠ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় এবং পার্থিব ও পরকালীন জীবনেও সুফল লাভ করা যায়। 


ٱلْـحَمْدُ لِلّٰهِ (আলহামদুলিল্লাহ) পড়ার ফযীলত

অর্থ: “সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।”


আলহামদুলিল্লাহ এর অর্থ ও তাৎপর্য:

"আলহামদুলিল্লাহ" বলা মানে, আপনি আল্লাহকে সর্বপ্রকার প্রশংসার যোগ্য ও কৃতজ্ঞতা পাওয়ার উপযুক্ত হিসেবে স্বীকার করছেন।


আলহামদুলিল্লাহ পড়ার ফযীলতসমূহ:

১. আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় শব্দ

হাদীস:

“আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় শব্দ হলো: আলহামদুলিল্লাহ।”

— (সহীহ মুসলিম, ২৭৩৫)


২. জীবনের প্রতিটি অবস্থা পূর্ণ করে

হাদীস:

“যদি কেউ বলে আলহামদুলিল্লাহ, তাহলে এটি তার জন্য পূর্ণ নেকি হয়ে যায়।”

— (তিরমিজি)


৩. জান্নাতে নেক আমলের গাছ রোপণ হয়

যখন কেউ "আলহামদুলিল্লাহ" বলে, জান্নাতে তার জন্য সওয়াব রেকর্ড হয়।


৪. নবী ﷺ এর ভাষায়: এটি তৌহীদের উত্তম গুণাবলির অন্তর্ভুক্ত

একজন মুমিন সব অবস্থায় কৃতজ্ঞ থাকেন, আর তার প্রকাশ হয় “আলহামদুলিল্লাহ” দ্বারা।


৫. দু:খে-সুখে বলা যায়

বিপদে পড়েও বললে আল্লাহ আরও ভালো কিছু দেন।

সুখের সময় বললে তা বৃদ্ধি পায়।


৬. নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুন্দর মাধ্যম

কুরআনে এসেছে:

“তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তবে আমি আরও বৃদ্ধি করে দেব।”

— (সূরা ইব্রাহিম ১৪:৭)


আরও কিছু ফজিলত নিচে দেওয়া হলো:

আলহামদুলিল্লাহ বলার কিছু ফজিলত বা গুরুত্ব নিচে দেওয়া হলো:

আলহামদুলিল্লাহ বলার অনেক ফজিলত রয়েছে। এর অর্থ হলো "সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য"। যেকোনো ভালো কিছু দেখলে বা শুনলে, অথবা কোনো আনন্দের সংবাদে এই দোয়াটি পড়া সুন্নত। এটি আল্লাহর শুকরিয়া জানানোর একটি মাধ্যম এবং এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। 

আলহামদুলিল্লাহ বলার কয়েকটি ফজিলত নিচে উল্লেখ করা হলো:

আল্লাহর সন্তুষ্টি:

আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা করা হয় এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। 

মিজানের পাল্লা ভারী হওয়া:

হাদিসে এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে মিজানের পাল্লা ভারী হয়। অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন এই বাক্যটি নেকির পাল্লাকে ভারী করে দিবে। 

অফুরন্ত নেকী:

আলহামদুলিল্লাহ বলা একটি সহজ আমল হলেও এর মাধ্যমে অফুরন্ত নেকী অর্জন করা যায়। 

আল্লাহর স্মরণ:

আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে বান্দা সবসময় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার সাথে সম্পর্ক গভীর করে। 

দুঃখ-কষ্ট লাঘব:

দুঃখের সময়েও আলহামদুলিল্লাহ বললে মহান আল্লাহ বান্দার কষ্ট লাঘব করেন এবং তাকে ধৈর্য ধারণের শক্তি দেন। 

কুরআনে এর গুরুত্ব:

পবিত্র কুরআনে আলহামদুলিল্লাহ শব্দটি বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। 

আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা: 

আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর দেওয়া সকল নেয়ামতের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন: 

আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। কারণ এটি আল্লাহর প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম।

সওয়াব লাভ: 

আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করা একটি ইবাদত এবং এর মাধ্যমে সওয়াব অর্জন করা যায়।

হাশরের ময়দানে কাজে আসবে: 

হাদিসে এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করা মিজানকে (নেকির পাল্লা) ভারী করবে এবং আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু আছে, তা পূর্ণ করে দেবে। 

সৃষ্টির সেরা বাক্য:

হাদিসে এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ সর্বোত্তম দোয়া এবং আল্লাহর প্রশংসা করার শ্রেষ্ঠ বাক্য। 

পবিত্র কোরআনে এর ব্যবহার: পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে আলহামদুলিল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা এর গুরুত্ব বহন করে। 

আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় এবং বিভিন্ন ধরনের ফজিলত বা সুফল লাভ করা যায়।

মোটকথা, আলহামদুলিল্লাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ বাক্য, যা মুসলিমদের সবসময় পড়া উচিত।