arafar diner fajilot-আরাফার দিনের ফজিলত ও করণীয়

আরাফার দিনের ফজিলত ও করণীয়


আরাফার দিন (৯ই জিলহজ্জ) ইসলামের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন দিন। এই দিনটি হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ — ওকূফে আরাফা পালিত হয়। হজে না থাকলেও সকল মুসলমানের জন্য এই দিনটি বিশেষ ফজিলত ও ইবাদতের সুবর্ণ সুযোগ।


আরাফার দিনের ফজিলত

হাদিসে বলা হয়েছে, এটি সর্বশ্রেষ্ঠ দিন

"আরাফার দিনের চেয়ে উত্তম কোনো দিন আল্লাহর নিকট নেই।"

— মুসলিম, আহমদ


এই দিনে আল্লাহ পাপ ক্ষমা করেন

“আরাফার দিনে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।”

— সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪৮


নবী ﷺ এই দিনে রোজা রাখতেন

“আরাফার দিনের রোজা বিগত এক বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মোচনের কারণ হয়।”

— সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১১৬২


শর্ত: হজে না থাকা ব্যক্তিদের জন্য রোজা রাখা উত্তম।

হজে থাকলে: রোজা রাখা মাকরুহ, কারণ এতে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।


এই দিনে আল্লাহর কাছে দোয়া কবুল হয়

“আরাফার দিনের চেয়ে উত্তম দোয়ার সময় আর নেই।”

— তিরমিযী, হাদিস: ৩৫৮৫


এই দিনেই দ্বীন পূর্ণ হওয়ার ঘোষণা হয়

"আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম..."

— সূরা মায়েদা: ৩

এই আয়াত আরাফার দিনে নাজিল হয়েছিল।


আরাফার দিনের করণীয় (হজে না থাকা মুসলিমদের জন্য)

রোজা রাখা: অতীত ও ভবিষ্যৎ এক বছর করে দুই বছরের গুনাহ মাফ হয়।

দোয়া করা:নিজের, পরিবার, উম্মাহর জন্য দীর্ঘ সময় ধরে দোয়া করুন।

যিকির: “সুবহানাল্লাহ”, “আলহামদুলিল্লাহ”, “আল্লাহু আকবার”, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” ইত্যাদি পড়ুন বেশি করে।

তাকবির বলা: “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ”

কুরআন তিলাওয়াত: সময় নিয়ে কুরআন পড়া ও বোঝার চেষ্টা করুন।

সদকা/দান:গরীবদের সাহায্য করা এবং সাওয়াব অর্জনের সুযোগ।

তওবা ও ইস্তিগফার: এদিন আল্লাহ বান্দাদের পাপ মাফ করেন। তাই আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া দরকার।


হজে অবস্থানরতদের জন্য (সংক্ষেপে)

আরাফাতের ময়দানে দুপুর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করা (ওকুফে আরাফা), যা হজের মূল রুকন।

নামাজ, দোয়া ও যিকিরে সময় কাটানো।

জাবালুর রাহমা এলাকায় দোয়া করা (কিন্তু পাহাড়ে চড়ার বিধান নেই)।


উপসংহার:

আরাফার দিন হলো রহমত, মাগফিরাত ও দোয়া কবুলের দিন। এ দিন এমন এক সুবর্ণ সুযোগ, যা বছরে একবারই আসে। যারা হজে নেই, তাদের জন্য এই দিন আত্মশুদ্ধি, দোয়া, রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিন।

❝যার কাছে আরাফার দিন আসলো, অথচ সে নিজেকে ক্ষমার উপযুক্ত করতে পারলো না — সে বড়ই দুর্ভাগা।❞

— ইমাম ইবনে রাজাব (রহ.)