সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত-Subhanallah porar fozilat

সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত

সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ ٱللَّٰهِ) একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক শব্দ যা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ "আল্লাহ অতি পবিত্র"। সুবহানাল্লাহ পাঠ করা একটি মূল্যবান ইবাদত, যা অনেক ফজিলত বয়ে আনে।  সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ ٱللَّٰهِ) শব্দটি "আল্লাহ মহান" বা "আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি" অর্থে ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করলে অনেক ফজিলত রয়েছে। এটি পাঠ করলে এক হাজার নেকি লেখা হয় এবং এক হাজার পাপ মোচন করা হয়, হাদিস অনুযায়ী। এছাড়াও, দৈনিক সুবহানাল্লাহ পাঠকারীর জন্য জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করা হয়।


سُبْحَانَ اللّٰهِ (সুবহানাল্লাহ) পড়ার ফযীলত

অর্থ: “আল্লাহ পবিত্র, তিনি সব ত্রুটিমুক্ত।”


সুবহানাল্লাহ এর তাৎপর্য:

"সুবহানাল্লাহ" বলা মানে আল্লাহকে সব প্রকার অপূর্ণতা ও ত্রুটি থেকে মুক্ত ঘোষণা করা। এটি তাসবীহর অন্যতম শব্দ এবং অন্যতম পছন্দনীয় জিকির।


সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলতসমূহ:

১. জান্নাতে খেজুরগাছ রোপণের কাজ হয়

 রাসূল ﷺ বলেন:

“যে ব্যক্তি সুবহানাল্লাহ বলবে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ রোপণ করা হবে।”

— (তিরমিজি: 3469)


২. যেকোনো সময় বললে আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়

সকালে, সন্ধ্যায়, হাঁটতে-চলতে, এমনকি শুয়ে থাকলেও বলা যায়।


৩. তাকদীর পরিবর্তনের চাবিকাঠি

হাদীসে আছে:

“তাকদীর কিছুই পরিবর্তন করতে পারে না, তবে দোয়া ও তাসবীহ তা করতে পারে।”

— (তিরমিজি)


৪. বিপদের সময় বললে শান্তি আসে

কষ্ট, দুঃখ বা চিন্তার সময় এই জিকির আত্মিক প্রশান্তি দেয়।


৫. দুনিয়া ও আখিরাতে পুরস্কার

হাদীস:

“দুইটি বাক্য জবানেই হালকা, তবে পাল্লায় ভারী, ও রাহমানের নিকট প্রিয়:

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম।”

— (বুখারি ও মুসলিম)



আরও কিছু ফজিলত নিচে দেওয়া হলো:


সুবহানাল্লাহ পড়ার ফজিলত:

গুনাহ মাফ:

সুবহানাল্লাহ পাঠ করলে মহান আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন, যেমন গাছ থেকে পাতা ঝরে যায়। 

নেকি লাভ:

সুবহানাল্লাহ পাঠ করলে নেকি লাভ হয় এবং অনেক সওয়াব অর্জিত হয়। 

আল্লাহর স্মরণ:

এটি আল্লাহর স্মরণের একটি মাধ্যম, যা বান্দার হৃদয়কে প্রশান্ত করে। 

আল্লাহর গুণগান:

সুবহানাল্লাহ পাঠ করে আল্লাহর গুণগান করা হয় এবং তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়। 

কুরআনে উল্লেখ:

সুবহানাল্লাহ শব্দটি পবিত্র কোরআনেও উল্লেখ করা হয়েছে, যা এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। 

হাদিসে বর্ণনা:

রাসুলুল্লাহ (সা.) সুবহানাল্লাহ ও অন্যান্য তাসবিহ পাঠের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। 

সওয়াব বৃদ্ধি:

প্রতিদিন ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করলে এক হাজার নেকি অর্জন করা যায় এবং এক হাজার পাপ মোচন হয় হাদিস থেকে জানা যায়।

জান্নাতে নেক আমল:

প্রত্যেক ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠের জন্য জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করা হয়।

আল্লাহর সন্তুষ্টি:

এই আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করা হয়।

মনের প্রশান্তি:

সুবহানাল্লাহ পাঠে মনে প্রশান্তি আসে এবং আল্লাহর প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

বিশেষ ফজিলত:

হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করবে, তার জন্য এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা তার এক হাজার পাপ মোচন করা হবে।

বিশেষভাবে, সকাল-সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করলে একশটি হজ্জের নেকী পাওয়া যায় অথবা একশটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সমান সওয়াব লাভ হয়।

৩৩ বার "সুবহানাল্লাহ" অর্থ হলো "আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি", এটি একটি জিকির। এই জিকিরটি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার পাঠ করার কথা বলা হয়েছে। 

নামাজের পর এই জিকিরটি পাঠ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। 

৩৩ বার "সুবহানাল্লাহ" পাঠ করার পর ৩৩ বার "আলহামদুলিল্লাহ" (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য) এবং ৩৩ বার "আল্লাহু আকবার" (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ) পাঠ করারও নিয়ম রয়েছে। সবশেষে একবার "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুল্কু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির" পাঠ করে ১০০ পূর্ণ করতে হয়।