সূরা মারইয়াম মূল বিষয় ও শিক্ষা কি?

সূরা মারইয়াম মূল বিষয় ও শিক্ষা কি?


সূরা মারইয়াম (سورة مريم) কুরআনের ১৯ নম্বর সূরা। এটি একটি মক্কী সূরা, এবং এতে রয়েছে ৯৮টি আয়াত। এই সূরাটি আল্লাহর নবীদের জীবন, তাদের দুঃখ-কষ্ট, ধৈর্য ও আল্লাহর ওপর ভরসার অসাধারণ চিত্র তুলে ধরে। বিশেষভাবে এতে হযরত মারইয়াম (আঃ) ও ঈসা (আঃ)-এর অলৌকিক জন্মের ঘটনা উল্লেখ রয়েছে।


সূরা মারইয়ামের মূল বিষয়:

নবী যাকারিয়া (আঃ) ও পুত্র ইয়াহইয়া (আঃ)-এর অলৌকিক জন্ম

বৃদ্ধ বয়সে নিঃসন্তান যাকারিয়া (আঃ)-এর দোয়া কবুল হয়

ইয়াহইয়া (আঃ)-এর নাম আল্লাহ নিজে রাখেন – এটি একটি অলৌকিক ঘটনা


হযরত মারইয়াম (আঃ) ও ঈসা (আঃ)-এর জন্ম

কুমারী মারইয়াম (আঃ)-কে ফেরেশতা জানায় সন্তান জন্মের খবর

ঈসা (আঃ) অলৌকিকভাবে জন্মগ্রহণ করেন এবং শৈশবেই কথা বলেন


তিনি বলেন:

"আমি আল্লাহর বান্দা, আমাকে কিতাব দেওয়া হয়েছে..." (আয়াত ৩০)


অন্যান্য নবীদের আলোচনা

ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁর কুফরি সমাজের বিরুদ্ধে সংগ্রাম

মূসা (আঃ), ইসমাঈল (আঃ), إدريس (আঃ)-এর প্রসঙ্গ

প্রত্যেক নবী ছিলেন আল্লাহর অনুগত, ধৈর্যশীল ও সৎচরিত্র


আখিরাত ও পুনরুত্থানের স্মরণ করানো

কিয়ামতের দিন মানুষ দলে দলে উপস্থিত হবে

আল্লাহর নিকটকাররা জান্নাতে, আর অপরাধীরা শাস্তি পাবে


সূরা মারইয়ামের শিক্ষা:

১. দোয়ার শক্তি ও আল্লাহর করুণা:

যাকারিয়া (আঃ)-এর দোয়া কবুল প্রমাণ করে, আল্লাহ কখনো দোয়া ফেরান না।


২. নারীর মর্যাদা ও পবিত্রতা:

মারইয়াম (আঃ) ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানিত নারী, যাঁর নামে একটি পূর্ণ সূরা।


৩. ঈসা (আঃ) আল্লাহর নবী, পুত্র নন:

সূরাটি খ্রিষ্টানদের ভুল ধারণার জবাব দেয় — ঈসা (আঃ) একজন নবী, আল্লাহর পুত্র নন।


৪. সত্য ও তাওহিদের দাওয়াত:

সব নবী মানুষকে আহ্বান করেছেন এক আল্লাহর ইবাদতে, শিরক থেকে দূরে থাকার।


৫. ধৈর্য ও তাকওয়ার মূল্য:

নবীরা কষ্ট সহ্য করে তাওহিদ প্রচার করেছেন — আমাদেরও তাই করা উচিত।


বিশেষ বৈশিষ্ট্য:

সূরাটিতে বেশিরভাগ অংশে আল্লাহর রহমত, দয়া ও অনুগ্রহ আলোচিত হয়েছে।

সূরাটি আবেগময়, অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এবং হৃদয়কে নরম করে এমন ভাষায় লেখা।

এই সূরার তেলাওয়াত করলে একজন মানুষের ঈমান ও আত্মা জাগ্রত হয়।


উপসংহার:

সূরা মারইয়াম আমাদের শেখায়:

❝আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন — এমনকি অসম্ভবকে সম্ভব করে দিতে পারেন। ধৈর্য, ঈমান ও দোয়াই সফলতার চাবিকাঠি।❞