একজন মাইগ্রেন রোগীর জীবনযাত্রা এবং খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত?-migraine patient lifestyle

একজন মাইগ্রেন রোগীর জীবনযাত্রা এবং খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত?

একজন মাইগ্রেন রোগীর জীবনযাত্রা ও খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন এনে মাইগ্রেনের আক্রমণ এবং তীব্রতা কমানো যেতে পারে। নিয়মিত জীবনযাপন, পর্যাপ্ত ঘুম, স্ট্রেস কমানো, এবং খাদ্যতালিকায় কিছু পরিবর্তন আনলে মাইগ্রেনের কষ্ট কম হতে পারে। 


জীবনযাত্রার পরিবর্তন:

নিয়মিত ঘুম: প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা প্রয়োজন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম: আপনার কাজের চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া উচিত।

নিয়মিত ব্যায়াম: হালকা ব্যায়াম মাইগ্রেন কমাতে সহায়ক হতে পারে।

স্ট্রেস কমানো: যোগব্যায়াম, ধ্যান বা আপনার পছন্দের কাজ করে স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করা উচিত।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।

নিয়মিত বিরতিতে খাবার খান: খালি পেটে থাকা বা দীর্ঘ সময় ধরে না খাওয়ার ফলে মাইগ্রেনের সমস্যা হতে পারে, তাই সময়মতো খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

কোমল পানীয় এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: এই দুটি জিনিস মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপানও মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত শব্দ, উজ্জ্বল আলো এবং তীব্র গন্ধ এড়িয়ে চলুন।

মাইগ্রেনের ট্রিগারগুলি সনাক্ত করুন: মাইগ্রেনের কারণগুলি সনাক্ত করুন এবং এড়িয়ে চলুন।


খাবার তালিকা:

নিয়মিত খাবার খান: আপনার প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খাওয়া উচিত।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান: পালং শাক, অ্যাভোকাডো, বাদাম এবং কলায় ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক।

ভিটামিন বি২ সমৃদ্ধ খাবার: ডিম, সবুজ শাকসবজি এবং মাংস ভিটামিন বি২ এর ভালো উৎস।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার: মাছ, বিশেষ করে তৈলাক্ত মাছ, মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক।

আদা, পুদিনা এবং ক্যামোমাইল চা: এই ভেষজ চা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

চকোলেট, পনির, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন।

চিনিযুক্ত খাবার এবং ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।

মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এমন খাবার চিহ্নিত করুন এবং এড়িয়ে চলুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই পরিবর্তনগুলি করার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।


একজন মাইগ্রেন রোগীর জীবনযাত্রা এবং খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত?

একজন মাইগ্রেন রোগীর জন্য সঠিক জীবনযাত্রা ও খাবার তালিকা মাইগ্রেন প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিচে একটি পরিপূর্ণ গাইড দেওয়া হলো —


মাইগ্রেন রোগীর জীবনযাত্রার নিয়ম

যেগুলো করবেন:

নিয়মিত ঘুম:

প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান ও জেগে উঠুন (৭–৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার)।


স্ট্রেস কমান:

মেডিটেশন, ইয়োগা, হালকা ব্যায়াম বা হেঁটে বেড়ানো উপকারী।


পানি পর্যাপ্ত পান করুন:

দিনে ৮–১০ গ্লাস পানি খান।


স্ক্রিন টাইম কমান:

দীর্ঘসময় মোবাইল/কম্পিউটার ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।


বাইরের রোদ ও গরম এড়িয়ে চলুন:

ছাতা/সানগ্লাস ব্যবহার করুন, দুপুরে বের না হওয়াই ভালো।


ব্যায়াম করুন:

হালকা অ্যারোবিক এক্সারসাইজ (যেমন হাঁটা) প্রতিদিন ২০–৩০ মিনিট।


যেগুলো এড়িয়ে চলবেন:

রাত জাগা

হঠাৎ না খেয়ে থাকা বা একেবারে উপোস

অতিরিক্ত ক্যাফেইন, চা-কফি

উচ্চ শব্দ বা তীব্র আলো

ধূমপান ও অ্যালকোহল

অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি বা চিনি


মাইগ্রেন রোগীর খাবার তালিকা

সকালের নাশতা (৮–৯ টা)

ওটস বা লাল আটার রুটি + ডিমের সাদা অংশ

১ গ্লাস হালকা গরম দুধ (যদি সমস্যা না হয়)

১টি কলা বা আপেল


দুপুরের খাবার (১–২ টা)

১ কাপ ভাত বা ২টি লাল আটার রুটি

শাকসবজি (পালং, লাউ, শিম, বেগুন)

১ টুকরো মুরগির বুকের মাংস বা মাছ

ডাল

১ গ্লাস লেবুর শরবত (চিনি ছাড়া)


বিকেলের নাস্তা (৪–৫ টা)

১ কাপ গ্রিন টি বা আদা চা

১ মুঠো বাদাম/কিশমিশ/চিঁড়া

১টি ফল (আপেল, পেয়ারা, কমলা)


রাতের খাবার (৮–৯ টা)

১ কাপ ভাত বা ২টি রুটি

হালকা ঝোলযুক্ত মাছ/মুরগি

সবজি

১ গ্লাস গরম পানি


যেসব খাবার মাইগ্রেন বাড়াতে পারে (এড়িয়ে চলুন):

চকলেট: ক্যাফেইন এবং ফেনিলেথাইলামিন

প্রসেসড খাবার (চিপস, ফাস্ট ফুড): প্রিজারভেটিভ

চিজ: টাইরামিন

কফি/চা বেশি: অতিরিক্ত ক্যাফেইন

আইসক্রিম বা ঠান্ডা খাবার: তাপমাত্রা হঠাৎ কমে মাইগ্রেন হতে পারে

গ্যাসযুক্ত পানীয়: ক্যাফেইন ও কৃত্রিম সুইটেনার


বিশেষ পরামর্শ:

নিজের ট্রিগার লিস্ট লিখে রাখুন (যেমন: রোদ, গন্ধ, ঘুম কম, কোন খাবার খেলে ব্যথা হয় ইত্যাদি)।

১টি মাইগ্রেন ডায়েরি রাখুন – কখন ব্যথা শুরু হয়, কতক্ষণ থাকে, কী খেয়েছিলেন – এসব নোট করুন।


একজন মাইগ্রেন রোগীর খাবার তালিকায় কিছু নির্দিষ্ট খাবার পরিহার করা এবং কিছু খাবার গ্রহণ করা উচিত। মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে এবং উপসর্গগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্য তালিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

যা যা খাবেন:

ফল ও সবজি:

সবুজ শাকসবজি, কলা, কিশমিশ, খেজুর, আপেল, কুমড়া, গাজর, ইত্যাদি ফল ও সবজি মাইগ্রেনের জন্য উপকারী হতে পারে। 

শস্য ও শিম জাতীয় খাবার:

লাল চাল, ওটস, ভুট্টা, মটরশুঁটি, সিম, ইত্যাদি খাদ্যশস্য ও শিম জাতীয় খাবার ট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। 

বাদাম ও বীজ:

কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, ইত্যাদি মাইগ্রেনের জন্য উপকারী হতে পারে। 

ডিমের কুসুম:

ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্লাভিন) থাকে যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক। 

ভেষজ চা:

আদা চা, পুদিনা চা, ক্যামোমাইল চা ইত্যাদি মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। 

দুগ্ধজাত পণ্য:

কিছু দুগ্ধজাত পণ্য, যেমন- আমেরিকান পনির, কটেজ পনির, রিকোটা পনির, এবং সাদা দুধ গ্রহণ করা যেতে পারে। 

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা:

শরীরে পানির অভাবে যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পানি পান করলে শরীরে আর্দ্রতা বজায় থাকে। 

যা যা পরিহার করবেন:

প্রক্রিয়াজাত খাবার:

ফাস্ট ফুড, সসেজ, বেকন, আচার, সয়া সস, ইত্যাদি খাবার মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে। 

চকলেট, পনির, এবং অ্যালকোহল:

চকলেট, কিছু পনির (যেমন- চেডার, মোজারেলা), এবং অ্যালকোহল মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। 

ক্যাফিন ও চিনি:

অতিরিক্ত ক্যাফিন ও চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় পরিহার করা উচিত। 

সাইট্রাস ফল:

কমলা, লেবু, এবং অন্যান্য সাইট্রাস ফল মাইগ্রেনকে আরও খারাপ করতে পারে। 

পেঁয়াজ ও রসুন:

কিছু মানুষের জন্য পেঁয়াজ ও রসুন মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। 

অন্যান্য:

কিছু ব্যক্তির জন্য কলা, অ্যাভোকাডো, এবং কিশমিশও মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। 

এই তালিকাটি সাধারণ নির্দেশিকা হিসাবে কাজ করে। আপনার জন্য কোন খাবারগুলি উপযুক্ত তা জানতে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো। 


কি কি কারণে একজন মানুষের মাইগ্রেন হয়?

মাইগ্রেনের সঠিক কারণ এখনো সম্পূর্ণরূপে জানা যায়নি, তবে কিছু বিষয় মাইগ্রেন হওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে জিনগত কারণ, পরিবেশগত কারণ এবং জীবনযাত্রার কিছু বিষয়। 

আরও কিছু কারণ যা মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে:

হরমোন পরিবর্তন:

মহিলাদের মধ্যে হরমোনের ওঠানামা মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে, বিশেষ করে মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের সময়। 

খাবার ও পানীয়:

কিছু খাবার ও পানীয় যেমন - চিজ, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে। 

মানসিক চাপ:

মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে। 

শারীরিক কারণ:

অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, ঘুমের অভাব বা ঘুমের অনিয়মিত ধরণ, এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন মাইগ্রেন শুরু করতে পারে। 

অন্যান্য কারণ:

কিছু ঔষধপত্র, উজ্জ্বল আলো, তীব্র গন্ধ, এবং কোলাহলপূর্ণ পরিবেশও মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে। 

আপনার যদি ঘন ঘন মাইগ্রেন হয়, তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারবেন। 


মাইগ্রেন হওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো পুরোপুরিভাবে জানা যায়নি, তবে কিছু বিষয় মাইগ্রেন হওয়ার প্রবণতা বাড়াতে পারে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:

১. জেনেটিক্স: মাইগ্রেন একটি বংশগত রোগ, তাই পরিবারের কারো মাইগ্রেন থাকলে অন্যদেরও হওয়ার সম্ভবনা থাকে। 

২. পরিবেশগত কারণ:

খাবার:

কিছু খাবার যেমন চকলেট, পনির, প্রক্রিয়াজাত মাংস, এবং ক্যাফিন মাইগ্রেন শুরু করতে পারে। 

হরমোন পরিবর্তন:

মহিলাদের ক্ষেত্রে, মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা, বা মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তন মাইগ্রেনকে প্রভাবিত করতে পারে। 

মানসিক চাপ:

মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বা বিষণ্ণতা মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে। 

ঘুমের অভাব:

অপর্যাপ্ত ঘুম বা ঘুমের প্যাটার্নে পরিবর্তন হলে মাইগ্রেন হতে পারে। 

আবহাওয়ার পরিবর্তন:

আবহাওয়ার আকস্মিক পরিবর্তন, যেমন তাপমাত্রা বা চাপ পরিবর্তন, মাইগ্রেনকে প্রভাবিত করতে পারে। 

কোলাহল ও তীব্র আলো:

কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ বা তীব্র আলো মাইগ্রেনকে আরও খারাপ করে দিতে পারে। 

৩. কিছু ঔষধপত্র: কিছু ঔষধ, যেমন জন্মনিরোধক পিল বা ঘুমের ওষুধ, মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে। 

৪. অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন সাইনাসের সংক্রমণ, দাঁতের সমস্যা, বা উচ্চ রক্তচাপ, মাইগ্রেনকে প্রভাবিত করতে পারে। 

৫. শারীরিক কার্যকলাপ: অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম মাইগ্রেনকে আরও খারাপ করে দিতে পারে। 

৬. শব্দ ও গন্ধ: তীব্র শব্দ বা তীব্র গন্ধ, যেমন পারফিউম, মাইগ্রেন শুরু করতে পারে।


মাইগ্রেন ৫–৭ বছর বয়স থেকে শুরু এবং এখনও চলছে, অর্থাৎ এটি ক্রনিক (দীর্ঘস্থায়ী) হয়ে গেছে।

রোদে গেলে

গরমে বের হলে

বাইরের পরিবেশে গেলে

মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়

এগুলো মাইগ্রেনের "ট্রিগার ফ্যাক্টর" হিসেবে পরিচিত।


সমস্যার ব্যাখ্যা

মাইগ্রেন সম্ভবত "হাইপারসেন্সিটিভ ট্রিগার মাইগ্রেন", যেখানে হালকা গরম, রোদ, ঘাম বা পরিবেশ পরিবর্তনেই মাথাব্যথা শুরু হয়। বয়স যত বেড়েছে, নিউরোসেন্সিটিভিটি (মস্তিষ্কের অতিসংবেদনশীলতা) তত বাড়তে পারে।


লক্ষণ অনুযায়ী ক্ষতির ঝুঁকি:

সম্ভাব্য ক্ষতিব্যাখ্যা

মনোযোগ কমে যাওয়া: কাজে, পড়াশোনায় ব্যাঘাত হতে পারে

অতিরিক্ত ক্লান্তি: ব্যথার পর পুরো শরীর নিস্তেজ লাগে

বাইরে যেতে ভয়: সোশ্যাল লাইফ, কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হয়

ওষুধ নির্ভরতা: নিয়মিত ওষুধ খেলে লিভার-কিডনির ক্ষতি হতে পারে

মানসিক চাপ: দীর্ঘমেয়াদে ডিপ্রেশন বা ঘুমের সমস্যা


কার্যকরী সমাধান

১. মাইগ্রেন ট্রিগার এড়িয়ে চলা (যতটা সম্ভব)

রোদ: ছাতা/সানগ্লাস/হালকা কাপড়

গরম: প্রচুর পানি পান, ঠান্ডা পানির ঝাপটা

বাইরে: হালকা ঠান্ডা পানীয়, মুখ ধোয়া, চোখে পানি

অনিদ্রা: সময়মতো ঘুম ও জাগা


২. ডাক্তারি চিকিৎসা (নিউরোলজিস্ট দেখান)

আপনি চাইলে প্রিভেন্টিভ থেরাপি নিতে পারেন (যেমনঃ Beta-blocker, Anti-epileptic, TCA ইত্যাদি – ডাক্তার সাজিয়ে দেন)

মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে আসলে অনেকের ক্ষেত্রে ট্রিগারে আর মাথাব্যথা হয় না বা কম হয়


৩. প্রাকৃতিক সমাধান ও ঘরোয়া টিপস

দিনে ৫–১০ মিনিট ধ্যান/শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম

পুদিনা পাতার রস কপালে লাগাতে পারেন ব্যথার সময়

মাথা ব্যথা শুরু হলে অন্ধকার, ঠান্ডা রুমে ২০ মিনিট বিশ্রাম

তুলসী চা বা আদা চা – প্রাকৃতিক ব্যথা প্রশমনকারী


৪. মাইগ্রেন ডায়েরি রাখুন

কখন ব্যথা হয়

কি খেলে বা করলে হয়

কতক্ষণ থাকে

এগুলো লিখে রাখলে ডাক্তার সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন


ব্যথা শুরু হলে কী করবেন?

মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা শুরু হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া খুব জরুরি, নইলে ব্যথা তীব্র হয়ে যায় এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। নিচে একটি "মাইগ্রেন ব্যথা শুরু হলে কী করবেন" – সহজবোধ্য চেকলিস্ট দিলাম:


মাইগ্রেন ব্যথা শুরু হলে করণীয়:

1. শান্ত, অন্ধকার ও ঠান্ডা ঘরে চলে যান

আলো ও শব্দ মাইগ্রেন বাড়িয়ে দেয়

জানালা বন্ধ করে রুম ঠান্ডা রাখুন (এসি/পাখা)


2. কপালে ঠান্ডা পানির কাপড়/আইস প্যাক দিন

বরফ বা ঠান্ডা পানি দিয়ে কাপড় ভিজিয়ে কপালে রাখুন

প্রতি ১০ মিনিটে নতুন করে দিন


3. পুদিনা/তুলসী পাতার পেস্ট লাগান (ঐচ্ছিক)

৫-৬টি পাতা বেটে কপালে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন

এটি মাথার রক্তসঞ্চালন ঠান্ডা করে


4. শ্বাস-প্রশ্বাস ধীরে ধীরে নিন (Relaxation Breathing)

চোখ বন্ধ করে, ৪ সেকেন্ডে নিঃশ্বাস নিন

৪ সেকেন্ড থামুন

৬ সেকেন্ডে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন

১০–১৫ বার করুন


5.  প্রয়োজনে ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ নিন

শুধু যখন ব্যথা সহ্য করা যাচ্ছে না, তখন

যেমন: Sumatriptan, Naproxen, Paracetamol, Migrex (ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনমতো)

একটানা ওষুধ খাওয়া ঠিক নয় – ব্যথা হলেই ওষুধ না খেয়ে ট্রিগার এড়াতে চেষ্টা করুন


6. ঠান্ডা পানি খান ও মুখ ধুয়ে ফেলুন

হালকা ঠান্ডা পানি ধীরে ধীরে খান

চোখে, গলায়, মাথায় পানি দিন


7. মোবাইল স্ক্রিন/টিভি/ল্যাপটপ বন্ধ করুন

আলোর ঝলকানি ব্যথা বাড়িয়ে দেয়


8. চোখ বন্ধ করে ১৫–২০ মিনিট ঘুমানোর চেষ্টা করুন

মাইগ্রেনের সময় ঘুম শরীরকে নিজে থেকেই ব্যথা প্রশমনে সাহায্য করে


যা করবেন না:

চা/কফি বেশি খাওয়া-কখনও ব্যথা বাড়াতে পারে

গরমে বাইরে যাওয়া-মাথা আরও ভারী হবে

জোরে আলো ও শব্দ-মাথা ব্যথা দ্বিগুণ হবে

নিজে নিজে সবসময় ওষুধ খাওয়া-অভ্যাস তৈরি হয়, কিডনি ক্ষতি হতে পারে


টিপস:

ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই প্রথম লক্ষণে (আলো সহ্য না হওয়া, ঘাড় টান, চোখ ভারী লাগা) ব্যবস্থা নিন

প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম ও খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন



মাইগ্রেন রোগীর চূড়ান্ত লক্ষ্য কী হওয়া উচিত?

লক্ষ্য:

মাইগ্রেনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা।


চূড়ান্ত উদ্দেশ্যগুলো হতে পারে:

মাইগ্রেনের তীব্রতা ও ঘনত্ব কমিয়ে আনা

→ ওষুধ, জীবনশৈলী ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।


মাথাব্যথা ছাড়াও দৈনন্দিন কাজ ঠিকমতো করা

→ অফিস, পরিবার, পড়ালেখা বা ব্যক্তিগত জীবন ব্যাহত না হওয়া।


ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা

→ নিয়মিত ব্যায়াম, ঘুম, স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে ওষুধ ছাড়া মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ।


মাইগ্রেন ট্রিগার চেনা এবং এড়িয়ে চলা শেখা

→ নিজেকে বোঝা, নিজের প্রতি যত্ন নেয়া।


আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শান্তি ফিরিয়ে আনা

→ যেন ব্যথা থাকলেও আপনি নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারেন।


সারসংক্ষেপে:

আপনার চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে –

"মাইগ্রেনকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাতে এটি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ না করে।"


উপসংহার:

আপনার বয়স কম থেকে মাইগ্রেন শুরু — মানে এটি ক্রনিক নিউরোলজিক্যাল কন্ডিশন।

কিন্তু সঠিক পরিচর্যা, ট্রিগার এড়ানো, এবং কিছু ঘরোয়া/ডাক্তারি নিয়মে আপনি এটা খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।