উকিল নিয়োগের নিয়ম কী?-ukil niyoger niyom

উকিল নিয়োগের নিয়ম কী?

উকিল বা আইনজীবী নিয়োগের জন্য কিছু সাধারণ নিয়মাবলী রয়েছে। প্রথমে, একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি (এলএলবি) অর্জন করতে হবে। এরপর, তাকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অধীনে একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, তিনি আইনজীবী হিসাবে সনদ লাভ করেন এবং আদালতে অনুশীলন করার যোগ্যতা অর্জন করেন। কিছু ক্ষেত্রে, সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করার জন্য আরও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হতে পারে। 

উকিল নিয়োগের নিয়মাবলী:

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছর মেয়াদী এলএলবি (সম্মান) ডিগ্রি অথবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দুই বা তিন বছর মেয়াদী এলএলবি (পাস) ডিগ্রি থাকতে হবে। 

কিছু ক্ষেত্রে, ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি বা আইনে স্নাতক ডিপ্লোমাও গ্রহণযোগ্য হতে পারে। 

বার কাউন্সিল পরীক্ষা:

আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনের পর, প্রার্থীকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অধীনে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। 

সনদ লাভ:

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, প্রার্থী আইনজীবী হিসেবে সনদ লাভ করেন। 

নিম্ন আদালত ও সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস:

সনদপ্রাপ্ত আইনজীবী নিম্ন আদালতে (জেলা আদালত ইত্যাদি) অনুশীলন করতে পারেন। 

সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করার জন্য, সাধারণত ২ বছরের নিম্ন আদালতে কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয়। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। 

এই নিয়মাবলী অনুসরণ করে একজন ব্যক্তি আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করতে পারেন। 


বাংলাদেশে একজন উকিল (আইনজীবী) নিয়োগ করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ধাপ ও নিয়ম রয়েছে। নিচে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করছি:


উকিল নিয়োগের নিয়ম (ধাপে ধাপে):

১. উপযুক্ত আইনজীবী বেছে নেওয়া

আপনার মামলার ধরন (ফৌজদারি, দেওয়ানি, পারিবারিক, ইত্যাদি) অনুযায়ী একজন বিশেষজ্ঞ উকিল খুঁজুন।

পরিচিত, আত্মীয়স্বজন, বা বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে সুপারিশ নিতে পারেন।

চাইলে জেলা জজ আদালত বা বার অ্যাসোসিয়েশনে গিয়ে উকিলদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন।


২. উকিলের সঙ্গে আলোচনা (Consultation)

আপনার সমস্যার বিস্তারিত উকিলকে বলুন।

তিনি আইনি পরামর্শ দেবেন এবং কিভাবে মামলা পরিচালনা করবেন তা ব্যাখ্যা করবেন।

উকিলের ফি ও খরচ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জেনে নিন।


৩. ওকালতনামা (Vakalatnama) বা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি স্বাক্ষর করা

ওকালতনামা হলো সেই দলিল যার মাধ্যমে আপনি আইনি ক্ষমতা দিয়ে উকিলকে আপনার পক্ষে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করতে অনুমতি দেন।

এটি স্ট্যাম্প কাগজে লিখিত হয় এবং আপনি ও উকিল দুজনেই তাতে স্বাক্ষর করেন।

উকিল তখন আপনার “নিয়োজিত আইনজীবী” হন।


৪. মামলার নথি ও প্রমাণাদি প্রদান

মামলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রমাণাদি, ছবি, সাক্ষ্যদাতার নাম ইত্যাদি উকিলকে দিন।

উকিল এগুলো পর্যালোচনা করে মামলার প্রস্তুতি নেবেন।


৫. মামলা দায়ের বা পরিচালনা শুরু

উকিল আদালতে মামলা দায়ের করবেন বা আগত মামলায় আপনার পক্ষে প্রতিরক্ষা করবেন।

তিনি আদালতে হাজিরা দেবেন, আবেদন করবেন, যুক্তি উপস্থাপন করবেন।


প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

জাতীয় পরিচয়পত্র / জন্মনিবন্ধন

সংশ্লিষ্ট মামলার কাগজপত্র

ছবি (১ কপি)

টাকা (ফি ও কোর্ট খরচ)

ওকালতনামা (ভূমি/ফৌজদারি/পারিবারিক অনুযায়ী)


উকিলের ফি কীভাবে ঠিক হয়?

মামলার জটিলতা, সময়, এবং উকিলের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ফি নির্ধারিত হয়।

ফি এককালীন অথবা ধাপে ধাপে (প্রতি শুনানিতে) দেওয়া যেতে পারে।

চাইলে লিখিত চুক্তি করাও নিরাপদ।


দরিদ্রদের জন্য ফ্রি উকিল:

আপনি যদি দরিদ্র হন, তাহলে সরকারি “লিগ্যাল এইড” বা এনজিওর মাধ্যমে বিনামূল্যে উকিল পেতে পারেন।

জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা (NLASO)

BLAST, ASK, BNWLA ইত্যাদি


সারসংক্ষেপ :

১. উকিল নির্বাচন: বিশেষজ্ঞ খুঁজুন (ফৌজদারি/দেওয়ানি/পারিবারিক)

২. আলোচনা: কেস ব্যাখ্যা ও খরচ সম্পর্কে জানুন

৩. ওকালতনামা: লিখিত অনুমতি দিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করুন

৪. প্রমাণাদি দিন: নথিপত্র উকিলকে দিন

৫. মামলা পরিচালনা: উকিল আদালতে আপনার পক্ষে কাজ করবেন



বাংলাদেশে একজন উকিল (আইনজীবী) নিয়োগের নিয়ম বা পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে সহজ, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক অনুসরণ করা জরুরি যাতে আপনি সঠিক ও কার্যকর আইন সহায়তা পান। নিচে ধাপে ধাপে উকিল নিয়োগের নিয়ম ব্যাখ্যা করছি:


ধাপ ১: আপনার মামলার ধরন নির্ধারণ করুন

প্রথমে বোঝার চেষ্টা করুন আপনি কোন ধরনের আইনি সমস্যার জন্য উকিল নিয়োগ করতে চাইছেন:

ফৌজদারি মামলা (চুরি, মারামারি, ধর্ষণ): Criminal Lawyer

দেওয়ানি মামলা (জমি, পাওনা টাকা): Civil Lawyer

পারিবারিক (তালাক, হেফাজত, ভরণপোষণ): Family Lawyer

হাইকোর্ট বা আপিল বিভাগে মামলা: Supreme Court Lawyer (Advocate of Supreme Court)


ধাপ ২: উপযুক্ত ও অভিজ্ঞ উকিল খুঁজে বের করুন

কোথায় খুঁজবেন?

জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন (Bar Association Office)

পরামর্শপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের রেফারেন্সে

অনলাইন/আইনি সহায়তা প্ল্যাটফর্মে (যেমন: BLAST, Ain o Salish Kendra)

আদালতের আশেপাশে অফিস আছে এমন উকিলদের সঙ্গে দেখা করুন

ভালো উকিল নির্বাচনের সময় তার অভিজ্ঞতা, মামলা জেতার হার, যোগাযোগের সহজতা ও সততা যাচাই করুন।


ধাপ ৩: আলোচনা ও ফি চূড়ান্ত করুন

আপনি কী জিজ্ঞেস করবেন:

উকিল কি আপনার মামলার ধরনে অভিজ্ঞ?

মামলা পরিচালনায় আনুমানিক খরচ ও সময় কত লাগবে?

তার সম্মানী (ফি) কীভাবে এবং কখন দিতে হবে?

সবসময় লিখিত চুক্তি বা টাকা নেওয়ার রসিদ চাইবেন।


ধাপ ৪: ভাকালতনামা (Vakalatnama) পূরণ ও স্বাক্ষর

ভাকালতনামা হচ্ছে একটি আইনি কাগজ, যার মাধ্যমে আপনি একজন আইনজীবীকে আপনার পক্ষে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা দেন।

তথ্য যা দিতে হবে

আপনার নাম ও ঠিকানা: বাদী বা বিবাদী হিসাবে

উকিলের নাম: যাকে নিয়োগ করছেন

মামলার ধরন: যেমন: ফৌজদারি, দেওয়ানি

স্বাক্ষর: আপনি ও উকিল উভয়ের

এটি কোর্ট ফিতে স্ট্যাম্পে ছাপানো হয় (৳১০ – ৳৫০ সাধারণত)।


ধাপ ৫: কাগজপত্র ও তথ্য সরবরাহ করুন

আপনার মামলা সম্পর্কিত সব দলিল, প্রমাণ, কাগজপত্র উকিলকে দিন।

যেমন:

জাতীয় পরিচয়পত্র

জমির দলিল (যদি প্রযোজ্য)

মেডিকেল রিপোর্ট/জিডি কপি

চুক্তিপত্র, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি


ধাপ ৬: মামলা শুরু ও নিয়মিত যোগাযোগ

উকিল আপনার পক্ষে কোর্টে মামলা দায়ের করবেন বা পরিচালনা করবেন

শুনানির দিন, কাগজ জমা দেওয়া, সাক্ষ্য নেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো পরিচালিত হবে

আপনি উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন


আপনি যদি গরিব বা আর্থিকভাবে অক্ষম হন?

বিনামূল্যে উকিল নিয়োগ পেতে পারেন নিচের মাধ্যমে:

জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা (NLASO): জেলা জজ কোর্টে অফিস আছে

BLAST, ASK, BNWLA: গরিব ও নারীদের বিনা খরচে আইন সহায়তা


সারাংশ: উকিল নিয়োগের সহজ ধাপ

মামলার ধরন বুঝুন

উপযুক্ত উকিল খুঁজুন

ফি আলোচনা ও ভাকালতনামা পূরণ করুন

কাগজপত্র দিন

যোগাযোগ বজায় রেখে মামলা চালান