শরীরচর্চা করার সঠিক নিয়ম কী?

শরীরচর্চা করার সঠিক নিয়ম কী?

শরীরচর্চা  (ব্যায়াম) করার সঠিক নিয়ম হলো একটি সুসংগঠিত, নিরাপদ এবং কার্যকর রুটিন অনুসরণ করা, যাতে শরীর সুস্থ থাকে এবং আঘাত এড়ানো যায়।

শরীরচর্চা করার সঠিক নিয়ম হলো প্রথমে আপনার শারীরিক ক্ষমতা এবং বয়স অনুসারে ব্যায়াম নির্বাচন করুন, ওয়ার্ম আপ করে শরীরকে প্রস্তুত করুন এবং ধীরে ধীরে ব্যায়ামের তীব্রতা বৃদ্ধি করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করা, সঠিক পোশাক পরে ব্যায়াম করা এবং ব্যায়ামের পরে শরীর ঠান্ডা করাও গুরুত্বপূর্ণ।


আরও বিস্তারিতভাবে, শরীরচর্চা করার সঠিক নিয়মগুলি নীচে দেওয়া হল:


শারীরিক ক্ষমতা এবং বয়স অনুসারে শরীরচর্চা নির্বাচন করা:

প্রত্যেক ব্যক্তি যে ধরণের ব্যায়াম করেন তা তাদের বয়স, শারীরিক অবস্থা এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। ভারী ব্যায়াম করার আগে হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করা উচিত।


ওয়ার্ম আপ:

ব্যায়াম শুরু করার আগে শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য উষ্ণতা বৃদ্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি পেশীগুলিকে উষ্ণ করে এবং ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত করে এবং আঘাতের ঝুঁকি হ্রাস করে।


ব্যায়ামের ধরণ:

হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং, সাঁতারের মতো মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম এবং পেশী শক্তি বৃদ্ধির জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।


পর্যাপ্ত পানি পান করুন:

ব্যায়ামের সময় শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।


সঠিক পোশাক:

আঁটসাঁট পোশাক পরে ব্যায়াম করা উচিত নয়। আরামদায়ক পোশাক পরলে ব্যায়াম করা সহজ হয়।


ব্যায়ামের পর ঠান্ডা হওয়া:

ব্যায়ামের পর শরীর ঠান্ডা করার জন্য ঠান্ডা হওয়া প্রয়োজন। এর ফলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয় এবং পেশীগুলো শিথিল হয়।


পরিমিত খাদ্যাভ্যাস:

ব্যায়ামের আগে বা পরে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়।


নিয়মিত ব্যায়াম:

প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম করা ভালো। এটি শরীরকে একটি রুটিনে অভ্যস্ত হতে সাহায্য করবে।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে ব্যায়াম নিরাপদ এবং কার্যকর হবে।



 নিচে ব্যায়ামের সঠিক নিয়মগুলোর ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা দেওয়া হল:


১. ওয়ার্ম-আপ - ৫-১০ মিনিট

শরীরকে ওয়ার্ম আপ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং আঘাতের ঝুঁকি কমায়।

উদাহরণ:

হালকা জগিং/দৌড়

জাম্পিং জ্যাক

হাত এবং পায়ের রক্ত সঞ্চালন


২. প্রধান ওয়ার্কআউট

আপনার লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে রুটিন পরিবর্তিত হতে পারে।


যদি আপনি ওজন কমাতে চান:

কার্ডিও ব্যায়াম: যেমন দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, স্কিপিং, উচ্চ-তীব্রতা ব্যবধান প্রশিক্ষণ (HIIT)

সময়: ২০-৩০ মিনিট


যদি আপনি পেশী তৈরি করতে চান:

ওজন প্রশিক্ষণ বা প্রতিরোধ প্রশিক্ষণ

প্রতিটি গ্রুপের জন্য ৩-৪ সেট, প্রতি সেটে ৮-১২টি পুনরাবৃত্তি

বিভিন্ন গ্রুপের জন্য সপ্তাহে কমপক্ষে ৩-৫ দিন


যদি আপনি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে চান:

মিশ্র ব্যায়াম: ১৫ মিনিট কার্ডিও + ১৫ মিনিট শরীরের ওজন ব্যায়াম (স্কোয়াট, পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক)


৩. কুল-ডাউন - ৫-১০ মিনিট

হালকা হাঁটা বা স্ট্রেচিং হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে

এটি পেশী ব্যথা কমাতে সাহায্য করে


৪. স্ট্রেচিং

ওয়ার্কআউটের আগে এবং পরে স্ট্রেচিং নমনীয়তা বৃদ্ধি করে এবং আঘাত কমায়।

প্রতিটি স্ট্রেচ ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।


অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম:

নিয়মিততা বজায় রাখুন - সপ্তাহে কমপক্ষে ৪-৫ দিন।

শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

ঘুম এবং বিশ্রাম - প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান এবং সপ্তাহে কমপক্ষে ১ দিন বিশ্রাম নিন।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস - ব্যায়ামের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খান।

আপনার শরীরের কথা শুনুন - ক্লান্ত বোধ করলে নিজেকে জোর করবেন না।


সতর্কতা:

আপনি যদি নতুন হন তবে ধীরে ধীরে শুরু করুন।

আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা থাকে তবে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।