সঞ্চয় কীভাবে করবো?
সঞ্চয় মানে হলো আয় থেকে কিছু টাকা ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখা — যাতে আপনি জরুরি সময়, বিশেষ লক্ষ্য (যেমন ফোন, বাড়ি, ভ্রমণ), অথবা অবসরের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন।
পদ্ধতি: ১
নীচে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করছি — সঞ্চয় কীভাবে করবেন (ধাপে ধাপে):
১. লক্ষ্য ঠিক করুন (কেন সঞ্চয় করবেন?)
আপনার সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য থাকলে টাকা জমাতে বেশি আগ্রহ তৈরি হয়।
উদাহরণ:
ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনতে
পড়াশোনার খরচ
ব্যবসা শুরু করতে
ভবিষ্যতের জরুরি খরচ
পরিবারকে সাহায্য করতে
২. আয় ও খরচ লিখে ফেলুন
প্রতি মাসে আপনি কত টাকা আয় করেন এবং কিসে কিসে খরচ করেন তা একটা খাতায় বা মোবাইলে লিখে ফেলুন।
লক্ষ্য: অপ্রয়োজনীয় খরচ চিহ্নিত করা।
৩. “আগে সঞ্চয়, পরে খরচ” অভ্যাস করুন
টাকা হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই প্রথমে সঞ্চয়ের টাকা আলাদা করুন। বাকি টাকা দিয়ে খরচ করুন।
যেমন: আয় = ৳১০,০০০ → আগে ২০% সঞ্চয় = ৳২,০০০ → বাকি ৳৮,০০০ খরচ
৪. সঞ্চয়ের জায়গা নির্ধারণ করুন
আপনার সঞ্চয় যেন হাতের কাছে না থাকে। নিচের যেকোনো একটা বেছে নিতে পারেন:
ব্যাংকে: সেভিংস অ্যাকাউন্ট-নিরাপদ, সুদ মেলে
বিকাশ/নগদ সেভিংস অপশন: মোবাইলেই সঞ্চয়, সহজ
DPS বা FDR:দীর্ঘমেয়াদী বড় সঞ্চয়ের জন্য
বাসায় আলাদা টাকাবাক্স: সহজে শুরু করার জন্য (শিশু বা ছাত্রদের জন্য ভালো)
৫. ছোট ছোট লক্ষ্য নিয়ে সঞ্চয় শুরু করুন
নতুন মোবাইল: ৫ মাস=৳১০০০
ঈদের খরচ:৩ মাস=৳৫০০
জরুরি ফান্ড: ৬ মাস=৳১৫০০
৬. অপ্রয়োজনীয় খরচ বন্ধ করুন
বাইরের খাবার কমান
না প্রয়োজন হলে জিনিস না কিনুন
সেল/ডিসকাউন্ট দেখে শুধু দরকারি জিনিস নিন
৭. নিয়মিত থাকুন, পরিমাণ বড় না হলেও চলবে
প্রতিদিন ২০ টাকা করে জমালেও মাসে ৳৬০০ হয়।
বিষয়টা পরিমাণ না, নিয়মিত অভ্যাস।
৮. সঞ্চয়কে অভ্যাসে পরিণত করুন
প্রতিদিন বা সপ্তাহে নির্দিষ্ট একটা সময় ঠিক করুন টাকা জমাতে
বাড়ির কেউ থাকলে তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে করতে পারেন 😄
অতিরিক্ত টিপস:
নিজের সঞ্চয়কে লক্ষ্য করে কিছু লিখে রাখুন, যেমন: “এই টাকা দিয়ে মা’র জন্য শাড়ি কিনবো” — এতে উৎসাহ বাড়ে!
চাইলে Excel, খাতা, বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে হিসাব রাখুন
পদ্ধতি: ২
সঞ্চয় করা মানে হলো আয় থেকে কিছু টাকা খরচ না করে ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখা। এটা অভ্যাসের বিষয়, এবং ছোট পরিমাণে শুরু করলেও নিয়মিতভাবে করলে বড় অঙ্ক জমে যায়।
নিচে ধাপে ধাপে সঞ্চয় করার উপায় তুলে ধরা হলো:
১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
প্রথমে ভাবুন আপনি কেন সঞ্চয় করতে চান — কারণ থাকলে সঞ্চয় করতে উৎসাহ পাবেন।
উদাহরণ:
মোবাইল কিনতে
পড়াশোনার খরচ
ঈদ/ভ্রমণের খরচ
ব্যবসা শুরু করতে
ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা
২. আয় ও খরচের হিসাব রাখুন
প্রতি মাসে কত টাকা আয় করছেন ও কোথায় কোথায় খরচ হচ্ছে তা লিখে ফেলুন।
এতে বুঝবেন কোথা থেকে টাকা বাঁচানো সম্ভব।
৩. “আগে সঞ্চয়, পরে খরচ” অভ্যাস করুন
টাকা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে প্রথমেই একটা অংশ সঞ্চয়ের জন্য আলাদা করুন।
উদাহরণ:
আয় = ৳১০,০০০ → সঞ্চয় (২০%) = ৳২,০০০ → বাকি খরচ = ৳৮,০০০
৪. সঞ্চয়ের জন্য আলাদা জায়গা রাখুন
যাতে সেই টাকা খরচ না হয়ে জমে থাকে।
উপায়গুলো:
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট: নিরাপদ, সুদ পাওয়া যায়
বিকাশ/নগদ সেভিংস: মোবাইলেই জমে থাকে
বাসার টাকাবাক্স: সহজ, দ্রুত শুরু করা যায়
DPS/FDR:মাসিক সঞ্চয়, নির্দিষ্ট সময় পর বড় অঙ্কে ফেরত
৫. ছোট থেকে শুরু করুন
প্রতিদিন ২০ টাকা জমালেও মাস শেষে ৳৬০০ হয়।
টাকা কম হলেও নিয়মিত সঞ্চয় করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
৬. অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিন
অহেতুক খাওয়া/কেনাকাটা কমান
অফার দেখে না কিনে, দরকার দেখে কিনুন
মাসে ১–২ দিন “নো স্পেন্ড ডে” রাখুন
৭. সঞ্চয়কে অভ্যাসে পরিণত করুন
প্রতিদিন বা সপ্তাহে নির্দিষ্ট একটা সময় ঠিক করুন জমা রাখার
প্রয়োজনে মোবাইল রিমাইন্ডার সেট করুন
পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে একসাথে সঞ্চয় শুরু করলে উৎসাহ বাড়ে
এক লাইনে মূল কথা:
“অল্প অল্প করে, নিয়মিতভাবে টাকা জমালেই সঞ্চয় বড় হয়।”
পদ্ধতি: ৩
সঞ্চয়ের জন্য কিছু কার্যকর কৌশল রয়েছে, যা গ্রহণ করে আপনি আপনার অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি নিরাপদ ভিত্তি তৈরি করতে পারেন। কিছু উপায় নিচে আলোচনা করা হল:
১. একটি বাজেট তৈরি করুন:
আপনার মাসিক আয় এবং ব্যয়ের একটি তালিকা তৈরি করুন।
অপ্রয়োজনীয় ব্যয় চিহ্নিত করুন এবং সেগুলি কমানোর চেষ্টা করুন।
প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয়ের জন্য আলাদা করে রাখুন।
২. ব্যয় কমানোর উপায়:
অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা এড়িয়ে চলুন।
বিদ্যুৎ এবং পানির অপচয় রোধ করুন।
কম দামে জিনিস কেনার চেষ্টা করুন।
বাইরে খাওয়া বা কেনাকাটার পরিমাণ কমিয়ে দিন।
৩. আয়ের অন্যান্য উৎস খুঁজুন:
খণ্ডকালীন কাজ করে বা ফ্রিল্যান্সিং করে অতিরিক্ত আয় করার চেষ্টা করুন।
আপনার শখ বা দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করুন।
পুরাতন জিনিস বিক্রি করুন।
৪. সঞ্চয়ের জন্য একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন:
একটি সঞ্চয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলুন এবং এতে নিয়মিত অর্থ জমা করুন।
আপনি একটি স্থায়ী আমানত বা ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে আপনাকে ভাল সুদ দেবে।
৫. বিনিয়োগ:
শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করে আপনি আপনার সঞ্চয় বাড়াতে পারেন।
তবে, বিনিয়োগের আগে, বাজার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে এবং বুঝতে ভুলবেন না।
৬. ঋণ এড়িয়ে চলুন:
অপ্রয়োজনীয় ঋণ নেওয়া এড়িয়ে চলুন।
ঋণ নিতে হলে দ্রুত তা পরিশোধ করার চেষ্টা করুন।
৭. আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন:
একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যেমন বাড়ি কেনা, সন্তানের শিক্ষা বা অবসর।
সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী সঞ্চয় করুন।
৮. অপ্রত্যাশিত আয়ের ক্ষেত্রে:
যদি আপনার কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে কোনও অর্থ আসে, তাহলে তার একটি অংশ সঞ্চয় করুন।
আপনি এই অর্থ দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন অথবা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিতে পারেন।
৯. নিয়মিত পর্যালোচনা করুন:
প্রতি মাসে আপনার সঞ্চয় এবং ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনা করুন।
প্রয়োজনে আপনার বাজেট এবং সঞ্চয় পরিকল্পনা সংশোধন করুন।
১০. আর্থিক শিক্ষার গুরুত্ব:
আর্থিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন।
বই, ম্যাগাজিন, অনলাইন সংস্থান বা প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধি করুন।
উপরের পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করে, আপনি আপনার অর্থ সাশ্রয় করতে পারেন এবং একটি নিরাপদ ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারেন।