ব্যাংক ঋণ (লোন) পদ্ধতি
ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। প্রথমে আপনাকে ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা শাখায় গিয়ে ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়ের প্রমাণপত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তারপর ব্যাংক আপনার প্রদত্ত তথ্য যাচাই করবে এবং আপনি ঋণের জন্য যোগ্য হলে ঋণ অনুমোদন করবে। ঋণের পরিমাণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হবে অথবা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংক সাধারণত মাসিক কিস্তি (EMI) নির্ধারণ করে।
ব্যাংক থেকে ঋণ (ঋণ) নেওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ, যোগ্যতা এবং নথিপত্র প্রয়োজন। আপনি যদি প্রথমবারের মতো ব্যাংক ঋণ নিতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত নির্দেশিকা আপনার জন্য সহজ এবং সহায়ক হবে।
পদ্ধতি: ১
ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পদক্ষেপ
১. ঋণের ধরণ নির্ধারণ করুন
প্রথমে আপনি কোন উদ্দেশ্যে ঋণ নিতে চান তা নির্ধারণ করুন। উদাহরণস্বরূপ:
ঋণের ধরণ
ব্যক্তিগত ঋণ ব্যক্তিগত খরচ, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি
ব্যবসায়িক ঋণ ব্যবসা শুরু/সম্প্রসারণের জন্য
গৃহ ঋণ জমি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য
গাড়ি ঋণ ব্যক্তিগত গাড়ি/বাণিজ্যিক গাড়ি কেনার জন্য
এজেন্ট ব্যাংকিং/এসএমই ঋণ ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসার জন্য
২. একটি উপযুক্ত ব্যাংক বা এনবিএফআই নির্বাচন করুন
উদাহরণ: ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডিবিবিএল, সিটি ব্যাংক, ইউসিবি, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ইত্যাদি
আপনি নিকটতম শাখায় যোগাযোগ করতে পারেন অথবা অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।
৩. প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পরীক্ষা করুন
সাধারণত:
প্রয়োজনীয় বিষয়
বয়স ২১-৬৫ বছর
আয় নির্দিষ্ট ন্যূনতম মাসিক আয় (ব্যাংক ভেদে পরিবর্তিত হয়)
চাকরি/ব্যবসা স্থায়ী চাকরি বা চলমান ব্যবসা
সিবিআই রিপোর্ট (ক্রেডিট হিস্ট্রি) ভালো হলে ঋণ পাওয়া সহজ
৪. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করুন
ব্যক্তিগত ঋণের জন্য:
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)
পাসপোর্ট সাইজের ছবি
ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সাধারণত ৬ মাস)
কর্মচারীদের জন্য: চাকরির সার্টিফিকেট, বেতন স্লিপ
ব্যবসায়ীদের জন্য: ট্রেড লাইসেন্স, আয়করের কাগজপত্র, ব্যবসায়িক তথ্য
গৃহ/ব্যবসায়িক ঋণের জন্য:
সম্পত্তির দলিল/দলিল/পরিকল্পনা
মূল্যায়ন প্রতিবেদন
জামায়াতিক নথি
ব্যবসায়িক নথি, কর রিটার্ন, টিআইএন সার্টিফিকেট
৫. আবেদন জমা দিন
ব্যাংক অফিসে গিয়ে ফর্ম পূরণ করে আবেদন করুন
অনেক ব্যাংকেও অনলাইনে প্রাথমিক ঋণের আবেদন করা যায়
৬. ব্যাংক যাচাইকরণ এবং অনুমোদন
ব্যাংক আপনার আয়, সিবিআই রিপোর্ট, জমা দেওয়া নথিপত্র যাচাই করবে
ফোনে অথবা প্রয়োজনে অফিসে যাবে
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, একটি অনুমোদন পত্র (ঋণ অনুমোদন) দেওয়া হবে
৭. চুক্তি এবং উত্তোলন
ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে
তারপর ব্যাংক ঋণের পরিমাণ আপনার অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করবে
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
ব্যাংক এবং ঋণের ধরণ অনুসারে সুদের হার পরিবর্তিত হয়
পরিশোধের সময়কাল সাধারণত ১-১০ বছর
EMI বা কিস্তি হল প্রতি মাসে পরিশোধ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট কিস্তি
কিছু ঋণের জন্য জামানত বা নিরাপত্তা প্রয়োজন, কিছু ঋণের জন্য নয় (ব্যক্তিগত ঋণ সাধারণত অসুরক্ষিত থাকে)
পদ্ধতি: ২
ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার পদ্ধতি:
১. ঋণের জন্য আবেদন করুন:
ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা শাখায় যান এবং ঋণের আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন।
আবেদনপত্রে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, আয়ের উৎস ইত্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করুন।
আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করুন।
২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্টের ফটোকপি।
বেতন/আয়ের প্রমাণপত্র (বেতন স্লিপ, আয়কর রিটার্ন, ইত্যাদি)।
ঠিকানার প্রমাণপত্র (বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, ইত্যাদি)।
পেশার প্রমাণপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়, যেমন - ট্রেড লাইসেন্স)।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সাধারণত ৬ মাস)।
অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি (যেমন - সম্পত্তির দলিল, জামিনদারের তথ্য, ইত্যাদি)।
৩. আবেদনপত্র এবং নথিপত্র জমা দেওয়া:
সঠিকভাবে পূরণ করা আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র ব্যাংক শাখায় জমা দিন।
৪. যাচাইকরণ প্রক্রিয়া:
ব্যাংক আপনার দেওয়া তথ্য এবং নথিপত্র যাচাই করবে।
প্রয়োজন অনুযায়ী, ব্যাংক আপনার সাথে যোগাযোগ করে অতিরিক্ত তথ্য চাইতে পারে।
৫. ঋণ অনুমোদন এবং বিতরণ:
ব্যাংক আপনার আবেদন অনুমোদন করলে ঋণ অনুমোদিত হবে।
ব্যাংক আপনাকে ঋণের পরিমাণ, সুদের হার এবং পরিশোধের সময়কাল সম্পর্কে অবহিত করবে।
ঋণের পরিমাণ সাধারণত একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয় অথবা চেকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
৬. ঋণ পরিশোধ:
ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংক সাধারণত একটি মাসিক কিস্তি (EMI) নির্ধারণ করে।
প্রতি মাসে আপনাকে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, ব্যাংক আপনার বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপ করতে পারে অথবা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
বিভিন্ন ব্যাংক বিভিন্ন ধরণের ঋণ প্রদান করে, যেমন ব্যক্তিগত ঋণ, শিক্ষা ঋণ, গৃহঋণ, গাড়ি ঋণ ইত্যাদি।
ঋণ নেওয়ার আগে, বিভিন্ন ব্যাংকের সুদের হার, প্রক্রিয়াকরণ ফি এবং অন্যান্য চার্জ সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নিন।
আপনার আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী ঋণ নিন এবং সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করুন।