শিশুশ্রম — হারিয়ে যাওয়া শৈশবের গল্প

শিশুশ্রম — হারিয়ে যাওয়া শৈশবের গল্প


ভূমিকা:

সকাল ৭টা। শহরের ব্যস্ততম এক গলিতে ১১ বছরের এক শিশু গ্যাস সিলিন্ডার বহন করছে। তার নাম কবির। তার হাতে বই এবং নোটবুক, কাঁধে ব্যাগ এবং চোখে স্বপ্ন থাকা উচিত। কিন্তু বাস্তবতার কঠোর আঁকড়ে ধরার কারণে, সে এখন নিজের কাঁধে জীবনের বোঝা বহন করছে। এটি আমাদের সমাজের একটি চরম বাস্তবতা - শিশুশ্রম।


সমস্যা চিত্র:

বাংলাদেশে আনুমানিক ৩৪ লক্ষ শিশু কোন না কোন ধরণের শ্রমে নিযুক্ত। শিশুদের চায়ের দোকান, গ্যারেজ, ইটভাটা, বাড়ি এবং এমনকি নির্মাণস্থলেও পাওয়া যায়। তারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে, খুব কম আয় করে এবং শারীরিক ও মানসিক ঝুঁকির মধ্যে বেড়ে ওঠে।


কেন শিশুশ্রম?

শিশুশ্রমের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে:

দারিদ্র্য

শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব

পিতামাতার অসহায়ত্ব

সস্তা শ্রমের চাহিদা

অনিয়ন্ত্রিত শ্রমবাজার

প্রায়শই দেখা যায় যে শিশুদের পরিবারের জন্য খাদ্য সরবরাহের জন্য কাজ করতে হয়। তবে, এটি তাদের শিশু অধিকার লঙ্ঘন করে।


শিশুশ্রমের পরিণতি:

স্কুল থেকে ঝরে পড়া

অপুষ্টি এবং শারীরিক ক্ষতি

সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশের প্রতিবন্ধকতা

শিশুর জন্য খেলাধুলা, শিক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ, শ্রম নয়।


পদক্ষেপ:

সরকারি আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন (শিশুশ্রম নিষিদ্ধকরণ আইন)

দারিদ্র্য দূরীকরণে সামাজিক সহায়তা বৃদ্ধি

স্কুলে ভর্তির জন্য প্রণোদনা

এনজিও, মিডিয়া, সমাজকর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি

জরুরি হেল্পলাইন এবং নির্ভরযোগ্য আশ্রয় কেন্দ্র


উপসংহার:

কবির  বা আকাশ — তারা কারো না কারো সন্তান, কারো না কারো ভাই, ভবিষ্যতের নাগরিক। আমরা যদি আজই পদক্ষেপ না নিই, তাহলে ভবিষ্যতের সমাজ আরও অন্ধকার হয়ে যাবে। শিশুশ্রম বন্ধ করতে হলে আমাদের মনোভাব, নীতি এবং কার্যকলাপ—সবকিছুই পরিবর্তন করতে হবে।


মন্তব্য:

“শিশুদের স্বপ্নে বেড়ে উঠতে দিন, শ্রমে নয়। কারণ একটি জাতির ভবিষ্যৎ তার সন্তান।”